আইকিউ [IQ] শব্দটি কম বেশি সবারই পরিচিত। IQ হল Intelligence Quotient এর সংক্ষিপ্ত রূপ। সহজ বাংলায় যার অর্থ বুদ্ধির মাত্রা।
বুদ্ধাঙ্ক— বুদ্ধাঙ্ক হচ্ছে ব্যক্তির মানসিক বয়সের সাথে সময়ানুক্রমিক বয়স বা প্রকৃত বয়সের অনুপাত।
বুদ্ধাঙ্ক (IQ) = মানসিক বয়স/ প্রকৃত বয়স X১০০
আইকিউ টেস্টে সাধারণত এমন কিছু প্রশ্ন দেওয়া হয়, যেখানে প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান বা সাধারণ জ্ঞানের প্রয়োজন হয় না। বিচক্ষণতা, দ্রুততা ও বুদ্ধিবৃত্তিক উত্তর প্রদানের ক্ষমতার ওপর ভিত্তি করে আইকিউ নির্ধারণ করা হয়।
১।পরিসংখ্যান অনুসারে বিশ্বে প্রায় অর্ধেক মানুষের আইকিউ ৯০- ১১০। এর মধ্যে। এ সংখ্যাকে স্বাভাবিক ধরা হয়।
২।কারও আইকিউ সংখ্যা ১৩০-এর চেয়েও বেশি হলে তাকে বুদ্ধিমান বলা হয়। বিশ্বে ২.৫ শতাংশ মানুষের আইকিউ সংখ্যা ১৩০-এর উপরে।
৩।আইকিউ সংখ্যা ১৪০ ছাড়িয়ে গেলে তাকে প্রতিভাবান বলা হয়। বিশ্বে এ ধরনের মেধাবীর সংখ্যা মাত্র ০.৫ শতাংশ।
আবার এর চেয়েও অনেক বেশি আইকিউ স্কোরের অধিকারী মানুষও রয়েছেন। তেমনি বুদ্ধাঙ্কের উপর ভিত্তি করে বুদ্ধি প্রতিবন্ধি শনাক্ত করা যায়।
ওয়েলসার এবং টারম্যান নামে দুই জন মনোবিজ্ঞানী বুদ্ধাঙ্কের উপর ভিত্তি করে বুদ্ধি প্রতিবন্ধীতা নির্ণয় করেছেন।
এই ক্ষেত্রে উনারা আদর্শায়িত বুদ্ধি অভীক্ষা ব্যবহার করেন। এই অভীক্ষায় একজন পরীক্ষক কর্তৃক একজন পরীক্ষণ পাত্রের বুদ্ধি পরিমাপ করা হয়। এইক্ষেত্রে অভীক্ষার অন্তর্ভূক্ত বিষয়গুলো হলো- স্মৃতিশক্তি (Short term memory), শব্দের ব্যবহার (Vocabulary), নৈব্যক্তিক যুক্তি (Abstract Reasoning) , সাধারন তথ্য (General Information), গানিতিক যুক্তি (Numerical Reasoning), পরিমাপক। প্রতিটি সঠিক উত্তরের নম্বর যোগ করে সাফল্যাঙ্ক গণনা করা হয়। পরে তা একটি আদর্শ নমুনার সাথে তুলনা করা হয়। অভীক্ষা গ্রহণের সময় পরীক্ষাণ পাত্রের সমবয়সী একটি বিরাট দলকে আদর্শ নমুনা হিসাবে নির্বাচন করে তাদের গড় মান নির্ধারণ করা হয়।
>>ওয়েলসারের বুদ্ধি অভীক্ষা অনুযায়ী বুদ্ধি প্রতিবন্ধীতার স্তর-
১। মৃদু বুদ্ধি প্রতিবন্ধী- এদের বুদ্ধাঙ্কে গড়ে ৭০-৫০ হয়। বিশেষ যতœ নিলে এরা শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে।
২। মধ্যম মাত্রার বুদ্ধি প্রতিবন্ধী- এদের বুদ্ধাঙ্কগড়ে ৪৯-৩৫ হয়। এই ধরনের প্রতিবন্ধী শিশুদের অনেকের ডাউন সিন্ডোম থাকে। অনেকের শারীরিক বৈকল্যও থাকতে পারে।
৩। গুরুতর মাত্রার বুদ্ধি প্রতিবন্ধী- এদের বুদ্ধাঙ্ক ৩৪-২০। এদের জন্মগ্রহণের পরপরই শনাক্ত করা যায়।
৪। চরম মাত্রার বুদ্ধি প্রতিবন্ধী- এদের বুদ্ধাঙ্ক ২০ এর কম। এদের মধ্যে অধিকাংশ শিশুর শারীরিক ও অন্যান্য বৈকল্য থাকতে পারে।
আজ আমরা জানব ক’জন মেধাবী মানুষের গল্প ও তাদের আইকিউ স্কোর—
১০।স্টিফেন হকিং—-> আইকিউ স্কোর- ১৬০
—————————————————
স্টিফেন হকিং। বর্তমান বিশ্বের সেরা বিজ্ঞানী তিনি। এরপরও এ তালিকায় তার অবস্থান সবার নিচে। স্টিফেন হকিং ১০ নম্বরে আছেন কারণ তার আইকিউ স্কোর ১৬০। ১৯৪২ সালের ৮ জানুয়ারি যুক্তরাজ্যে জন্মগ্রহণ করেন এ মহান বিজ্ঞানী। বিশিষ্ট ইংরেজ তাত্তি্বক পদার্থবিজ্ঞানী ও গণিতজ্ঞ হিসেবে বিশ্বের সর্বত্র পরিচিত ব্যক্তিত্ব। হকিং ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের লুকাসিয়ান অধ্যাপক হিসেবে ১ অক্টোবর-২০০৯ তারিখে অবসর নেন। এ ছাড়াও তিনি ক্যামব্রিজের গণভিলি এবং কেয়াস কলেজের ফেলো হিসেবে কর্মরত আছেন। শারীরিকভাবে ভীষণরকম অচল এবং এ এল এসের জন্য ক্রমাগতভাবে সম্পূর্ণ অথর্বতার দিকে ধাবিত হওয়া সত্ত্বেও বহু বছর ধরে তিনি তার গবেষণা কার্যক্রম সাফল্যের সঙ্গে চালিয়ে যাচ্ছেন।
পদার্থবিজ্ঞানে হকিংয়ের দুটি অবদানের কথা সবচেয়ে বেশি স্বীকৃত। প্রথম জীবনে সতীর্থ রজার পেনরাজের সঙ্গে মিলে সাধারণ আপেক্ষিকতায় সিঙ্গুলারিটি সংক্রান্ত তত্ত্ব। হকিং প্রথম অনিশ্চয়তার তত্ত্ব ব্ল্যাক হোলের ঘটনা দিগন্তে প্রয়োগ করে দেখান যে ব্ল্যাক হোল থেকে বিকিরিত হচ্ছে কণাপ্রবাহ। প্রায় ৪০ বছর ধরে হকিং তত্ত্বীয় পদার্থবিজ্ঞানের চর্চা করছেন। লিখিত পুস্তক এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানে হাজির থেকে হকিং একাডেমিক জগতে যথেষ্ট খ্যাতিমান হয়ে উঠেছেন। তিনি রয়েল সোসাইটি অব আর্টসের সম্মানীয় ফেলো এবং পন্টিফিকাল একাডেমি অব সায়েন্সের আজীবন সদস্য।
৯।আইনস্টাইন—->>আইকিউ স্কোর- ১৬০-১৯০
——————————
আলবার্ট আইনস্টাইনকে সর্বকালের অন্যতম সেরা বুদ্ধিমানদের একজন মানা হলেও এ তালিকায় তার স্থান নবম। জার্মানিতে জন্মগ্রহণকারী একজন নোবেল বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী। তিনি তার আপেক্ষিকতার তত্ত্ব এবং বিশেষত ভর-শক্তি সমতুল্যতার সূত্র আবিষ্কারের জন্য বিখ্যাত। তিনি ১৯২১ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
আইনস্টাইন পদার্থবিজ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রচুর গবেষণা করেছেন এবং নতুন উদ্ভাবন ও আবিষ্কারে তার অবদান অনেক। সবচেয়ে বিখ্যাত আপেক্ষিকতার বিশেষ তত্ত্ব বলবিজ্ঞান ও তড়িচ্চুম্বকত্বকে একীভূত করেছিল এবং আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্ব অসম গতির ক্ষেত্রে আপেক্ষিকতার তত্ত্ব প্রয়োগের মাধ্যমে একটি নতুন মহাকর্ষ তত্ত্ব প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। ৭৬ বছর বয়সে ১৯৫৫ সালের ১৭ এপ্রিল তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
৮।জুডি পলগার– >> আইকিউ স্কোর- ১৭০
—————————————-
১৯৭৬ সালের ২৩ জুলাই হাঙ্গেরিতে জন্মগ্রহণকারী জুড পলগার [Judi Polgar] সেরা বুদ্ধিমানদের তালিকায় দ্বিতীয় নারী। সম্মিলিত তালিকায় তিনি সপ্তম এবং মেয়েদের মধ্যে দ্বিতীয়। আর গ্যারি কাসপারভের পর এ তালিকার দ্বিতীয় দাবাড়ু তিনি। তাকে সর্বকালের সেরা মেয়ে দাবাড়ু মনে করা হয়। মাত্র ১৫ বছর বয়সেই সবচেয়ে কমবয়সী হিসেবে দাবায় গ্রান্ডমাস্টার খেতাব অর্জন করেন জুডি। যেটি প্রমাণ করে বাল্যকাল থেকেই অসীম মেধার স্বাক্ষর রেখেছিলেন তিনি। মেয়েদের মধ্যে তিনিই একমাত্র দাবাড়ু যে কি না বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন খেলোয়াড়দের র্যাপিড বা ক্ল্যাসিকাল চেস এ হারিয়ে খ্যাতি অর্জন করেন।
তার শৈশব কেটেছে সংগ্রামে সংগ্রামে। তার অন্য দুই বোনও দাবা খেলায় পারদর্শী ছিলেন। পরে জুডি তার মেধার জোরে গোটা পরিবারের ভাগ্য বদল করতে সমর্থ হন। অসীম মেধাবী জুডির আইকিউ স্কোর ১৭০, যা স্বাভাবিক মানুষের চেয়ে অনেক অনেক বেশি।
৭।লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি—>>আইকিউ স্কোর- ১৮০-১৯০
——————————
লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির জন্ম ইতালির ফ্লোরেন্সের অদূরবর্তী ভিঞ্চি নগরের এক গ্রামে ১৪৫২ সালের ১৫ এপ্রিল। তিনি ইতালীয় রেনেসাঁসের কালজয়ী চিত্রশিল্পী। অবশ্য বহুমুখী প্রতিভাধর লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি একজন ভাস্কর, স্থপতি, সংগীতজ্ঞ, সমরযন্ত্রশিল্পী হিসেবেও বিখ্যাত। তার বিখ্যাত শিল্পকর্মগুলোর মধ্যে মোনালিসা, দ্য লাস্ট সাপার অন্যতম। তার শৈল্পিক মেধার বিকাশ ঘটে খুব অল্প বয়সেই। তার আইকিউ স্কোর ছিল ১৮০-১৯০ এর পর্যায়ে।
আনুমানিক ১৪৬৯ সালে রেনেসাঁসের অপর বিশিষ্ট শিল্পী ও ভাস্কর আন্দ্রেয়া ভেরোচ্চিয়োর কাছে ছবি আকায় ভিঞ্চির শিক্ষানবিস জীবনের সূচনা। এ শিক্ষাগুরুর অধীনেই তিনি ১৪৭৬ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয়ে, বিশেষত চিত্রাঙ্কনে বিশেষ দক্ষতা অর্জন করেন। ১৪৭২ সালে তিনি চিত্রশিল্পীদের গিল্ডে ভর্তি হন এবং এ সময় থেকেই তার চিত্রকর জীবনের সূচনা হয়। ১৪৭৮ সাল থেকে ১৫১৬-১৭ ও ১৫১৯ সাল অর্থাৎ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত প্রসারিত এবং বিভিন্ন পর্বে বিভক্ত, এক দীর্ঘ ও অক্লান্ত কর্মসাধনার জীবন তার। আনুমানিক ১৪৮২ সালে তিনি মিলান গমন করেন এবং সেখানে অবস্থানকালে তার বিখ্যাত দেয়াল চিত্র দ্য লাস্ট সাপার অঙ্কন করেন। আনুমানিক ১৫০০ সালে তিনি ফ্লোরেন্স ফিরে আসেন এবং সামরিক বিভাগে প্রকৌশলী পদে নিয়োগ লাভ করেন। এ সময়েই তিনি তার বিশ্বখ্যাত চিত্রকর্ম মোনালিসা অঙ্কন করেন। জীবনের শেষকাল তিনি ফ্রান্সে কাটান। ১৫১৯ সালের ২ মে এই মহান শিল্পী মৃত্যুবরণ করেন।
৬।ম্যারিলন স্যাভেন্ট–>>আইকিউ স্কোর– ১৯০
——————————
ম্যারিলন ভস স্যাভেন্টের [Marilyn Vos Savant ] জন্ম ১৯৪৬ সালের ১১ আগস্ট। আমেরিকায় জন্মগ্রহণকারী এই নারীর আইকিউ স্কোর ১৯০। শীর্ষ দশের তালিকায় তিনিই প্রথম নারী। সে হিসেবে নারীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বুদ্ধিমান বলা যেতে পারে ম্যারিলন স্যাভেন্টকে। তিনি আমেরিকান একজন ম্যাগাজিন কলামিস্ট, লেখক, লেকচারার এবং নাট্যকার হিসেবে দারুণ খ্যাতি অর্জন করেছেন। ছোটবেলায় তিনি তার বাবার সঙ্গে দোকানে কাজ করতেন। আর তখন থেকেই বই আর সংবাদপত্র পড়ুয়া হিসেবে অভ্যস্ত হয়ে ওঠেন তিনি। এর পর স্থানীয় একটি সংবাদপত্রে কাজ করার সুযোগ হয় তার। অল্প দিনেই ধাঁধা বা পাজল তৈরি ও সমাধানে তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৮৫ সালে নারীদের মধ্যে সর্বোচ্চ আইকিউ স্কোরার হিসেবে গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লেখান তিনি।
৫।গ্যারি ক্যাসপারভ– >>আইকিউ স্কোর- ১৯৪
——————————
গ্যারি ক্যাসপারভের [Garry Kasparov] জন্ম রাশিয়ায় [তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন]। তার আইকিউ স্কোর ১৯৪। তিনি মূলত একজন রাশিয়ান দাবাড়ু। দাবায় সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন গ্যারি ক্যাসপারভ একজন আন্তর্জাতিক গ্রান্ডমাস্টারও বটে। এর বাইরেও তার আরও কিছু পরিচয় রয়েছে। দাবা খেলার বাইরে তিনি একজন লেখক, রাজনৈতিক অ্যাক্টিভিস্টও বটে। ছোটবেলা থেকেই তিনি দাবা খেলার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তবে যখন তার বাবা-মা তাকে দাবা সংক্রান্ত কঠিন কঠিন সমস্যার মুখোমুখি করেন তখনই তিনি সিরিয়াসলি খেলা শুরু করেন। তার প্রশিক্ষণ শুরু হয় ১১ বছর বয়সে। ১৩ বছর বয়সেই তিনি সোভিয়েত ইউনিয়নের জুনিয়র দাবায় চ্যাম্পিয়ন হন। ১৯৮৫ সালে তিনি তার জীবনের প্রথম টাইটেল জয় করেন। মস্কোতে সেবার তিনি ১২.৫ পয়েন্ট পেয়ে চ্যাম্পিয়ন হন। ২০০৫ সালের ১০ মার্চ তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিযোগিতামূলক দাবা থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
৪।কিম অং ইয়ং– >>আইকিউ স্কোর- ২১০
——————————
কিম অং ইয়ং [Kim Ung-Yong]–এর জন্ম ১৯৬২ সালের ৮ মার্চ কোরিয়ায়।
২১০ আইকিউ স্কোরধারী এ মানুষটিও একেবারে শিশুকাল থেকেই নিজের মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন। অসামান্য মেধাবী কিম অং ইয়ং মাত্র ২ বছর বয়সেই কোরিয়ান, জাপানি, জার্মান এবং ইংরেজি ভাষায় দারুণ পারদর্শিতা অর্জন করেন। কিম অং ইয়ংয়ের সবচেয়ে বড় মেধা হচ্ছে তিনি মাত্র এক মাসেই যে কোনো বিদেশি ভাষা আয়ত্ত করে ফেলতেন। মাত্র ৪ বছর বয়সে তিনি ইউনিভার্সিটিতে যোগ দেন। তখন থেকেই তিনি জটিল ডিফারেনশিয়াল এভিআই ইন্টিগ্রাল ক্যালকুলাসের সহজ সমাধান দিয়ে দিতে পারতেন। আর মাত্র ৮ বছর বয়সেই তার ডাক আসে আমেরিকার নাসা থেকে। সেখানে তিনি পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন গবেষণামূলক কাজ করেন। গণিত, পদার্থবিদ্যা এবং বিদেশি ভাষায় এমন অসামান্য দক্ষতা প্রদর্শনকারী মানুষ পৃথিবীতে খুব কমই আছেন।
৩।ক্রিস্টোফার হিরাটা– >>আইকিউ স্কোর- ২৫৫
——————————
টোরেন্স টাওয়ের মতো তার আইকিউ লেভেলও ২৫৫।
ক্রিস্টোফার হিরাটার জন্ম ১৯৮২ সালের ৩০ নভেম্বর। তিনি পদার্থবিদ্যা এবং গণিতে সবিশেষ পারদর্শিতা অর্জন করেন। এ তালিকার অন্য মেধাবীদের মতো ক্রিস্টোফার হিরাটাও ছোটবেলা থেকেই তার অসীম মেধার স্বাক্ষর রেখেছিলেন। তিনি যখন ১২ বছরের বালক তখনই তিনি পদার্থবিদ্যা এবং গণিতে তার কলেজে লেভেলের পড়াশোনা সম্পন্ন করেন। মাত্র ১৩ বছর বয়সে তিনি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান অলিম্পিয়ার্ডে স্বর্ণপদক লাভ করেন। আর ১৬ বছর বয়সে তিনি মঙ্গল বিজয় সংক্রান্ত নাসার প্রজেক্টে কাজ শুরু করেন। এত অল্প বয়সে নাসার কোনো প্রকল্পে কাজ করার সুযোগ খুব কম মানুষই পেয়েছে। তিনি প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি থেকে তার পিএইচডি সম্পন্ন করেন। বর্তমানে তিনি ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে অ্যাস্ট্রো ফিজিঙ্রে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন।
২।টেরেন্স টাও—>>আইকিউ স্কোর- ২৫৫
——————————
টেরেন্স টাও [ Terence Tao] আইকিউ স্কোরারের তালিকায় দ্বিতীয় স্থান দখল করে আছেন।
উইলিয়াম জেমস সিডিসের মতো তিনিও গণিতে বিশেষ পারদর্শী। তার আইকিউ লেভেল হচ্ছে ২৫৫। একজন আধুনিক গণিতজ্ঞ হিসেবে গণিতের বিভিন্ন শাখায় তার অস্বাভাবিক রকমের পারদর্শিতা রয়েছে, যা তাকে অন্যান্য সাধারণ গণিতবিদ থেকে একেবারেই আলাদা করে রেখেছে। তিনি হারমনিক এনালাইসিস, পার্শিয়াল ডিফারেন্সিয়াল ইকুয়েশন, রামসি থিওরি, র্যা নডম ম্যাট্রিক্স থিওরিসহ অন্যান্য বিষয়ে সবচেয়ে বেশি পারদর্শী।
তিনি বর্তমানে লস অ্যাঞ্জেলসে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ায় শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। মাত্র দুই বছর বয়স থেকেই তার পাটিগণিত ও অন্যান্য গাণিতিক ক্ষমতা সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল। মাত্র ৯ বছর বয়সেই তিনি ইউনিভার্সিটি লেভেলের গাণিতিক সমস্যা সংক্রান্ত কোর্স শেষ করেন। মাত্র ১৬ বছর বয়সেই তিনি বিএ এবং এমএ শেষ করেন।
১।উইলিয়াম জেমস সিডিস—>>আইকিউ স্কোর- ২৫০-৩০০
——————————
আলবার্ট আইনস্টাইন-স্টিফেন হকিংদের ছাপিয়ে আইকিউ টেস্টে সর্বোচ্চ স্কোরের অধিকারী একেবারেই আনকোড়া একজন।
তিনি উইলিয়াম জেমস সিডিস। বিস্ময়কর হলেও সত্য তার আইকিউ লেভেল ২৫০-৩০০, যা রীতিমতো অস্বাভাবিক রকমের। ফলে এ মানুষটিকে মনে করা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে বুদ্ধিমান ব্যক্তি। খ্যাতিতে তার চেয়ে এগিয়ে অনেক বুদ্ধিমান বা মেধাবী থাকলেও আইকিউ স্কোরে তিনিই সবার সেরা।
উইলিয়াম জেমস সিডিসের জন্ম ১৮৮৮ সালের ১ এপ্রিল। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের সাধারণ একটি পরিবারে জন্ম নেওয়া উইলিয়াম জেমস তার বুদ্ধিমত্তার ছাপ রাখেন একেবারে ছোটবেলা থেকেই। ছয় বছর বয়সে একটি গ্রামার স্কুলে ভর্তি হন তিনি। আর মাত্র সাত মাসে গ্রাজুয়েশন শেষ করেন। ১১ বছর বয়সে হার্ভার্ড চলে যান তিনি। আর পরিণত বয়সে পেঁৗছার আগেই বিশ্বের ৪০টি ভাষা তার দখলে ছিল। তিনি গণিতে সবচেয়ে বেশি পারদর্শী ছিলেন। হার্ভার্ডে তিনি কয়েকজন সাধারণ ছাত্র কর্তৃক শারীরিকভাবে নির্যাতিত হয়েছিলেন। যে কারণে তার পরিবারের পক্ষ থেকে উইলিয়াম জেমসের জন্য রাইস ইউনিভার্সিটি ইন টেঙ্াসে একজন টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্টের চাকরিতে নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু ছাত্রদের ভয়ভীতি প্রদর্শন ও অসহনীয় পরিবেশ তাকে চাকরির ব্যাপারে হতাশ করে তোলে। শেষ পর্যন্ত তিনি চাকরি ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। অসম্ভব রকম মেধাবী এই মানুষটি পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিকভাবে নিজের ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে উদ্যোগী হন। এর মধ্যেই ১৯৪৪ সালে তার মৃত্যু ঘটে। তার মৃত্যুর কারণ ছিল তার মস্তিষ্কের ক্ষতি-সংক্রান্ত বিষয়। একই কারণে তার বাবারও মৃত্যু হয়েছিল।
তথ্যসূত্রঃ ইন্টেরনেটের বিভিন্ন সাইট ।